বিবিপি নিউজ নেটওয়ার্ক,নিউ দিল্লি: ভারতের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। এই প্রথম দেশের প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের বিচারপতির বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন। দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ সিবিআইকে অনুমতি দিলেন, হাইকোর্টের এক বিচারপতি এসএন শুক্লার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা রুজু করতে।
জানা গেছে বিচারপতি শুক্লা ২০১৭ সালে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজকে আনুকূল্য প্রদর্শন করায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন বিচারকদের একটি প্যানেলে। এটি দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন, এই প্রথম একজন কর্মরত বিচারপতিকে জেরা করবে সিবিআই।
এই তদন্ত দেশের প্রধান বিচারপতির সম্মতি ছাড়া করা সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত পূর্ববর্তী প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বিচারপতি শুক্লাকে পদত্যাগ বা স্বেচ্ছাবসর নিতে বলেছিলেন। কিন্তু বিচারপতি গগৈ গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি চিঠি লিখে বিচারপতি শুক্লাকে ‘অভিযুক্ত' করার জন্য সংসদে একটি পদক্ষেপের আর্জি জানান।
২০১৭ সালে বিচারপতি শুক্লার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করার জন্য তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বিচারপতিদের একটি প্যানেল গঠন করেন। তাঁদের তদন্ত করে দেখতে বলেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্রতি শুক্লা পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছেন কিনা।
অভিযোগ, বিচারপতি শুক্লা তাঁর নিজের বেঞ্চের নির্দেশে হাতে লিখে সংশোধন করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট লখনউয়ের জিসিআরজি ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে ২০১৭-১৮ সালের পড়ুয়া ভর্তি নেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার ব্যাপারে জানায় হাইকোর্টকে। ওই মেডিক্যাল কলেজটিকে সরকারের তরফে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নিতে নিষেধ করা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল সেখানকার পরিকাঠামো নিম্নমানের এবং প্রয়োজনীয় শর্তও পালন করা হচ্ছে না।মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার আবেদনের ভিত্তিতে পরিবর্তিত হাইকোর্ট নির্দেশিকাটি বেআইনি ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট।
পরে বিচারপতিদের প্যানেলে দোষী সাব্যস্ত হন শুক্লা। প্যানেলের তরফে জানানো হয় অভিযুক্ত বিচারপতি আদালতের অবমাননা করেছেন। তবে এটি যে ভারতের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা যা আর বলতে বাকি রইল না।তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই এই বিষয়ে মত প্রকাশ করে বলেছেন যদি খোদ বিচারপতির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ওঠে,তাহলে, সাধারণ নাগরিকরা কি করবে? তবে এই সিদ্ধান্ত যে ভারতের ইতিহাসে খোদাই করা থাকবে তা আর বলতে বাকি রইল না।
