মাসুদূর রহমান
শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারে বসবাস করেন তাঁরা,অথচ তাঁদের বোধ বুদ্ধি এবং বিচার-বিবেচনা অতি নিম্নমানের। স্বনামধন্য বাবা-মার আদরের ছেলে লন্ডনে গিয়েছিলেন বান্ধবীর পার্টি অ্যাটেন্ড করতে।তা সেই দুধে-ভাতে ছেলের রাজকীয় প্রত্যাবর্তন হল ১৫ই মার্চ রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে।আর সেদিন থেকেই হলো ঘটনার সূত্রপাত, স্বয়ং ভগীরথ কমণ্ডুলে করে মর্তলোকে নিয়ে এসেছিলেন মা গঙ্গাকে। আর বর্তমানের ভগীরথ তথা প্রভাবশালী বাবা ও মায়ের আদুরে লাডলা লণ্ডন থেকে এই বঙ্গে নিয়ে এলেন এই মুহুর্তের গোটা বিশ্বের ত্রাস সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসকে। প্রথম দিনেই ওই প্রভাবশালী সন্তানের শারীরিক পরীক্ষা করেই চিকিৎসকেরা বেলেঘাটা হসপিটালে ভর্তি হওয়ার জন্য অনুরোধ পর্যন্ত করেছিলেন।কিন্তু সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হবে এমন মনোবাসনা তার ছিল না। তাই স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসকদের পরামর্শকে প্রভাব খাটিয়ে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে মায়ের হাত ধরে প্রথমে নবান্ন পরে মহাকরণ গমন করলেন।শুধু তাই নয় শহরের নামি শপিংমল সহ আরো অন্যান্য জায়গায় প্রায় শতাধিক মানুষের সাথে মেলামেশা করে তিনি ক্ষান্ত হলেন।অর্থাৎ একবাক্যে করোনার মতো মারাত্মক বীজকে অত্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে বপন করলেন এই বঙ্গে। পরিশেষে একপ্রকার চিকিৎসকদের ধমকেই তিনি ভর্তি হলেন।আর ভর্তির সাথে সাথেই করোনা পজেটিভ সংক্রমণ দেখা দিল তার শরীরে। কিন্তু প্রশ্ন হল, যে শতাধিক মানুষের সাথে মেলামেশা করলেন তিনি, এক দায়িত্ববোধ জ্ঞানহীন মানুষের মত তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়ে তিনি কেন এমন অবিবেচকের মতো কাজ করলেন? দ্বিতীয় প্রশ্ন, সেই প্রভাবশালী বাবা-মা সহ অন্যান্যদের সংক্রমণ রিপোর্টে নেগেটিভ এসেছে, আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন, তাহলে এখানেও কি তারা প্রভাব খাটিয়ে রিপোর্ট নেগেটিভ করেছেন? কেননা যে বা যাঁরা নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে এমন মারণ ভাইরাসকে রাজ্যের সর্বোচ্চ দপ্তর থেকে শুরু করে পাবলিক প্লেসে এমন খুল্লামখুল্লা ঘুরে বেড়াতে পারে,তাহলে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে যে নেগেটিভ করবে না,তার বিশ্বাসযোগ্যতা কোথায়?