শূন্যতায় ভরা ক্লাসরুম ,ডুঁকরে কাঁদছে পড়ুয়ারা - BBP NEWS

Breaking

রবিবার, ১০ মে, ২০২০

শূন্যতায় ভরা ক্লাসরুম ,ডুঁকরে কাঁদছে পড়ুয়ারা

মাসুদূর রহমান: করোনার কারণে লকডাউন এর ৫০ তম দিন অতিবাহিত। এখনো সে দাপটের সাথে ব্যাটিং করছে।রক্ষণাত্মক ফিল্ডিংয়ের প্রাচীর ভেদ করে কখনও ওভার বাউন্ডারি কখনও বাউন্ডারি মেরেই চলেছে। কোথায় যে এই ঝড়ো ইনিংস গিয়ে থামবে তা কারোর জানা নেই। আবার এই করোনার হিংস্রতাই তাদের জীবনকে একেবারে মরুভূমি তুল‍্য করে তুলেছে। এবার নিশ্চয়ই মনে প্রশ্ন জাগছে, তারা কারা? একটু সবুর করুন, তাদের সম্পর্কেই তো বলব। তারা যে এই গৃহবন্দী জীবন কাটাতে কাটাতে একেবারে হাঁসফাঁস করছে। তার ওপরে এই বেহায়া গরমও যে পড়েছে।স্বয়ং বিবিপি নিউজ এর সম্পাদক বেড়িয়েছিলেন তাদের খোঁজ নিতে। তারা কেমন আছে এই লকডাউনে?
 তিনি গেলেন শহর থেকে প্রত‍্যন্ত গ্রামের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে।ঢুকলেন স্কুলের ক্লাসরুমে। ক্লাসরুমে ঢুকেই দেখলেন, শূন্যতায় গ্রাস করেছে ক্লাসরুম। আধুনিক সভ্যতার কালো সিমেন্টের বোর্ডের নিচে ১৫.০৩.২০২০ তারিখটা হাতে লেখা আছে। হলেই বা নড়বড়ে, কিন্তু স্পষ্ট। তারমানে ওইদিনই হয়েছে স্কুলের শেষ ক্লাস।আজও সুন্দর করে সারিবদ্ধ ভাবে বেঞ্চ গুলো সাজানো আছে‌। তাতে কতদিন হল কেউ হুড়োহুড়ি করে বসেনি। টেবিলের উপর আছে ডাস্টার ও চক, কতদিন যে সেগুলো কেউ ব্যবহার করেনি।দেওয়ালে ঝোলানো আছে ম্যাপ, অফিস ঘরে পড়ে আছে ঘন্টা, তাতে জমে উঠেছে ধুলো। কতদিন সেও যে ঢং ঢং করে বেজে ওঠে নি।গোটা স্কুল জুড়ে শূন্যতা, শূন্যতা, শুধুই শূন্যতা…...।
 কিন্তু যাদের জন্য এই স্কুল প্রাঙ্গণ আনন্দে হাসিতে হৈ-হুল্লোড়ে ভরে উঠতো,এবার তিনি গেলেন তাদের কাছে। তারাতো স্কুলের কথা বলতেই যেন হাতে চাঁদ পেলো,মুখে আনন্দে হাসির ঝিলিক খেলো গেলো।কেউ বলে উঠলো, 'কবে খুলবে আমাদের স্কুল? কতদিন আমার ওই বন্ধুর সাথে দেখা হয়নি, মন খুলে খেলতে পারিনি।' আবার কেউ তো সরাসরি নিজেদের অভিভাবকদের কাঠগড়ায় তুলে দিলো, 'বাবা-মা খুব দুষ্টু, আমার মুখে হাতে কি সব পরিয়ে ঘরে বন্দি করে রেখেছে। আমি যেন জেলখানাতে আছি।' গ্রামের দিকে তবুও যদি বা এ বাড়ি সে বাড়ি জানালা বা দরজা দিয়ে কথা বলা যায় বন্ধুদের সাথে।শহরের তো কোন বালাই নেই। তাদের অবশ্য মুঠোফোনের ওপরই নির্ভর করে থাকতে হয়। সেখানেও হয়েছে তাদের জ্বালা। বাবার তো এই লকডাউনে অফিস বন্ধ। তাই তাঁকেও কাজ সারতে হচ্ছে ওই মুঠোফোনেই। আর মা তিনিতো বাড়ির কাজকর্ম সেরে মা মাসি পিসি বাবার সাথে কথা বলে টাইম পাস করতে ব্যস্ত।তাই বাড়ির খুদে টিই পড়েছি মুশকিলে। সে তাহলে কখন কথা বলবে তার বন্ধুদের সাথে? বাড়ির দুটো ফোনই যখন ব্যস্ত তখন তাকে বাড়ির এক কোণে বসে ডুঁকরে ডুঁকরে কাঁদতে হয়।তার মন ছটফট করে ওঠে স্কুলে যাওয়ার জন্য। তাদেরকে স্কুল যে ডাকে। তাদের স্কুল কবে খুলবে তা একমাত্র করোনাই জানে। আর করোনা যদি নট আউট হয়ে যায়, তাহলে কি হবে তাদের?

Pages