মাসুদূর রহমান
লকডাউনের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অনেক নিয়মই প্রত্যক্ষ দর্শন করলো ১৩০ কোটি ভারতবাসী। নিয়ম করে সময়মতো জনতা কার্ফুতে সামিল হলো, ঘন্টা থালা বাজলো, প্রদীপ মোমবাতি জ্বলে উঠলো, বাড়ির মেইন গেটের কাছে লক্ষণরেখা পড়ল, দো গজ দুরি পালন শুরু হল, মুখে মাস্ক ও হাত স্যানেটাইজ করতে শুরু করলো দেশব্যাপী। এত কিছু করার পরেও শেষ রক্ষাটা আর হলো না।এখানেই অভাবনীয় ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকতে হয় যে, যখন দেশজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০০০,৩০০০,৪০০০০ পর্যন্ত প্রতিদিন হচ্ছিল তখন মৃতের সংখ্যাও কখনো ১০০ বা কখনো ২০০ মধ্যেই ঘোরাফেরা করত কিন্তু সেই মারণব্যাধির আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যা আজ দেশজুড়ে প্রত্যেকটি দিন যেন রেকর্ড ভাঙার খেলায় মেতেছে আর সেখানেই কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য সরকার করোনা ভাইরাস এর মত এক মহামারীর আতঙ্কের কথা ভুলে ভোটের বাদ্যি বাজিয়ে দিয়ে একে অপরের প্রতি কাজের খতিয়ান এর জবাবে শামিল হয়েছে।
শুধু তাই নয়, আনলক-১ শুরু হতে না হতেই রাজ্যজুড়ে সরকারি বাস চলাচলের ধুম পড়ে গেল। সরকার ঘোষণা করেছিল প্রত্যেকটি সিটে এক জন করে প্যাসেঞ্জার বসতে পারবে কিন্তু তা আর হল কোথায়? যেখানে বাস কম যাত্রী সংখ্যা বেশি সেখানে এই নিয়ম তো শুধুমাত্র পাগলের প্রলাপ। তাই সেখানেও সামাজিক দূরত্ব উঠলো শিকেয়। আনলক-১ শুরু হওয়ার মাত্র কয়েকটা দিন পরেই অর্থাৎ ৮ই জুন রাজ্য সরকারের বদান্যতায় সারা বাংলা জুড়ে সরকারি বাসের সাথে পাল্লা দিয়ে দূরপাল্লার গাড়ি ও চলতে শুরু করলো। আর সেখানেই লকডাউন এর আগের দৈনন্দিন কলকাতার আসল চিত্রটা স্পষ্ট হয়ে উঠল। এক প্রকার চেনা মুশকিল হয়ে গিয়েছিল কলকাতাকে।এটা কি লকডাউনের কলকাতা নাকি কল্লোলীনি কলকাতার পুরানো মেজাজ? এবার শুরু হয়েছে মন্দির মসজিদ খুলে দেওয়ার জল্পনা।শুধু বাকি রয়ে গেল স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় গুলো। সেগুলো খুলে দিলেই ষোলোকলা পূর্ণ হবে। কিন্তু কোন ও সরকার ভাবলো না যে লকডাউন শুরুর সময়ে যে কড়াকড়ি নিয়ম বলবৎ ছিল তা এখনও পর্যন্ত সেই নিয়ম লাগু করাই উচিত ছিল। কিন্তু না করে অধিক মাত্রায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর পথ প্রশস্ত হলো এই নিয়ম ভাঙার খেলায়।