ছুটির ঝঞ্ঝাট, দ্বিমত অভিভাবকদের - BBP NEWS

Breaking

শুক্রবার, ৬ মে, ২০২২

ছুটির ঝঞ্ঝাট, দ্বিমত অভিভাবকদের

 



মাসুদূর রহমান



বৈশাখের প্রথমার্ধ কেটে গেলেও মেলেনি কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টি। কয়েকদিন আগে পর্যন্ত প্রখর রোদে নাজেহাল অবস্থা তৈরি হয় রাজ্যবাসীর। বিগত কয়েক বছরের রেকর্ড ভেঙে সর্বচ্চো তাপমাত্রায় হাঁসফাঁস অবস্থা তৈরি হয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে রাজ্য সরকার তীব্র দাবদাহের হাত থেকে রক্ষা পেতে একাধিক নির্দেশিকা জারি করে জনসাধারণদের সতর্ক জারি করেন। কলকাতা ও পাশ্ববর্তী জেলা সহ বাঁকুড়া পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম জেলার তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলে। এমনকি জল সঙ্কট দেখা দেয় বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম জেলায়। এরপরেই রাজ্যের সরকার সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল কলেজের গরমের ছুটি এগিয়ে নিয়ে আসার।  আর গরমের ছুটি অন্যান বছরের তুলনায় এগিয়ে এসেছে প্রায় ১৫ দিন। কিন্তু গরমের ছুটি পড়তেই ঝড়বৃষ্টির কারণে আবহাওয়াও কিছু মনোরম। এরপরেই গরমের ছুটি এগিয়ে আনার সরকারি সিদ্ধান্ত ঘিরে ঘোর বিতর্ক দানা বেঁধেছে। জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। 



রাজ্যে প্রবল তাপের কারণে স্কুল-কলেজে গ্রীষ্মের ছুটি এগিয়ে আনা নতুন ঘটনা নয়। অতীতেও এ-হেন সরকারি সিদ্ধান্তের সাক্ষী হয়েছে। এমনও হয়েছে, গ্রীষ্মাবকাশ পেরিয়ে সবেমাত্র স্কুল খোলার অব্যবহিত পরেই ফের তা কিছু দিনের জন্য বন্ধ করে দিতে হয়েছে অত্যধিক গরমের কারণে। তা ছাড়া অনেক জায়গাতেই সরকারি স্কুলের পরিকাঠামোয় লক্ষণীয় খামতি আছে। অনেক স্কুলে পাখা নেই, বিদ্যুৎ নেই, পানীয় জলেরও অভাব রয়েছে। এই সমস্ত দিক বিবেচনা করে এ বারও স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত। 


তবু এই বছরটি আলাদা। শিক্ষক-অভিভাবকদের একাংশের মধ্যে যে স্কুল বন্ধের ঘোষণাকে ঘিরে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারন মহামারী ভাইরাসের জেরে প্রায় দু'বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ ছিল। অবশেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত পঠনপাঠন শুরু করা সম্ভব হয়েছে। ধীরে হলেও ছন্দে ফিরছে শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ, শিক্ষক-পড়ুয়ার সম্পর্ক, পরীক্ষার সময়সূচি। এমতাবস্থায় যে কোনও ছন্দপতন এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিকে স্তব্ধ করে পুনরায় এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে তা স্পষ্ট।  ইতিমধ্যেই মাঝপথে পড়া ছেড়ে পরিবারের অন্ন সংস্থানে মন দিয়েছে, এমন পড়ুয়ার সংখ্যাটি নেহাত কম নয়। অন্যদের ক্ষেত্রেও এই দু’বছরের ক্ষতি সহজে পূরণ হওয়ার নয়। 



 কেন গরম বাড়লেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হবে এবং প্রায় দেড় মাস ধরে গ্রীষ্মাবকাশ চলবে— সেই প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ছুটির ঘোষণা সত্ত্বেও পুরনো সূচি মেনেই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, ক্লাস চলেছে। রবিবার সরকারি স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষাও নেওয়া হয়েছে। যার জেরে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনেক বেসরকারি স্কুলেও নিয়মিত পঠনপাঠন হয়েছে। এমন অবস্থায় অনেক অভিভাবকই চাইছেন রাজ্যের স্কুলে ছুটি কমিয়ে শুরু করা হোক পঠনপাঠন, শুধু অভিভাবকেরাই নন এমন অভিমত শিক্ষকদের একাংশের। শিক্ষকেরা জানিয়েছেন। সবেমাত্র স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সরকার মনিং-এ পঠনপাঠন চালু রাখতে পারত। তারপরেও এতদিন বন্ধ থাকায় অনেক প্রভাব পড়েছে। পড়ুয়াদের উপর। যদিও এই বিষয়ে এখন রাজ্য সরকার কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে তার অপেক্ষায় রয়েছেন অভিভাবক থেকে শিক্ষকেরা। 




Pages