বিবিপি নিউজ,নিজস্ব প্রতিনিধি: নাট্যজগতে আবির্ভাবেই সাড়া ফেলে দিয়েছে "শোভাবাজার ভোরের পাখি" নাট্যগোষ্ঠী। ঝরা বসন্তের এক রবিবাসরীয় স্বর্ণালী সন্ধ্যায় উত্তর কলকাতার খ্যাতনামা মঞ্চগুলির অন্যতম গিরিশ মঞ্চে "শোভাবাজার ভোরের পাখি"র প্রথম প্রয়াস স্বনামধন্য প্রথিত যশা মঞ্চ ও পর্দার এক দুঁদে অভিনেতা শুধু নয় নির্দেশক,লেখক মনোজ মিত্রের "গন্ধজালে" নাটকটির মঞ্চায়ন হলো।
ঝরা বসন্ত শুধুই গাছগাছালির পত্রমোচন করে না,সেই বসন্তই আবার বৃক্ষে বৃক্ষে শাখা-প্রশাখায় কিশলয়ে ভরিয়ে তোলে।তেমনি আরেক দুঁদে, সমহিমায় মহিমান্বিত নাট্যব্যক্তিত্ব যার আলতো ছোঁয়ায় কিংবা উপস্থিতিতে একটা ছোট্ট সৃষ্টিও এক যুগান্তকারী সৃষ্টির স্মারক হয়ে ওঠে বা উঠতে পারে।তারই জলন্ত নিদর্শনের সাক্ষী থাকল নাট্যকার,নির্দেশক,অভিনেতা শ্যামল সরকারের সাফল্যের ঝুলিতে।পাশাপাশি "শোভাবাজার ভোরের পাখি"ও পড়লো সাফল্যের বিজয় তিলক।নির্দেশক শ্যামল সরকারের নির্দেশনায় "গন্ধজালে" নাটকটি যেন প্রাণ প্রতিষ্ঠা পেল।সংযোজিত হলো বাংলা নাট্যজগতে আরও একটি সোনার পালক।
নাটকের বিষয়বস্তুর উপর আলোকপাত করলে শিহরিত হতে হয়,যুগ যুগ ধরে শিশু থেকে প্রবীণাকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে অপমানিত, লাঞ্ছিত,নিপীড়িত,অত্যাচারিত, ধর্ষিতার তিলক পরিয়েছে।কাউকেও রেহাই দেয়নি। রেহাই দেয়নি অন্ধ মহিলাকেও।সেই মর্মান্তিক হৃদয়বিদারক ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নাটকটির এগিয়ে চলা।পরিশেষে তার উদ্ঘাটন।কিন্তু নাটকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অভিনেতা-অভিনেত্রীরা যে দক্ষতার সাথে মনমুগ্ধকর অভিনয়ের দাপট দেখালো তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।তার সাক্ষীও থাকলো প্রেক্ষাগৃহ।দর্শকদের আনন্দ আর আবেগ-উচ্ছ্বাস,দাঁড়িয়ে করতালিতে মুখরিত হল প্রেক্ষাগৃহ।
নীলকন্ঠ চরিত্রে (ঋতায়ন চট্টোপাধ্যায়),পঙ্খী চরিত্র (পেখম সামন্ত),দিদি কুন্তির চরিত্রে (শিরোপা রায় ),জামাইবাবু তাপসের চরিত্রে (সুশান্ত চৌধুরী) এবং পুরোহিত চরিত্রে (প্রশান্ত সরকার) সকলেই নিজ নিজ অভিনয়ে একে অপরকে টেক্কা দিয়েছে।কারো খুঁত ধরে যে সমালোচনার কলম চালাবে সাংবাদিক সে সুযোগের সুচাগ্র মেদিনীও তারা দেয়নি। অসাধারণ আলো প্রক্ষেপণ,অভাবনীয় মিউজিক,অনবদ্য মঞ্চসজ্জার ভাবনা। সব মিলিয়ে পরিচালক শ্যামল সরকার মহাশয়কে যতই প্রশংসার বাক্য প্রয়োগ করা হোক না কেন, মনে হয় কমই প্রয়োগ করা হলো।"গন্ধজালে"র সুগন্ধ বসন্তের মধুময় দক্ষিণা বাতাসে ভর করে চারিদিকে ব্যপ্ত হোক।