মাসুদুর রহমান
করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাসে গোটা বিশ্ব আতঙ্কিত।ভারতবর্ষ ও সেই গ্রাস থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারেনি। সেজন্য বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশের শাসক সরকার সেই দেশের নাগরিকদের প্রতি যথেষ্ট সচেতনতা অবলম্বনও করেছে। উদাহরণ স্বরূপ আলাদা করে বলা যেতে পারে কানাডার কথা। কারণ ওই দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইতিমধ্যেই লকডাউন এর কথা ঘোষণা করেছেন। এদিকে ভারতবর্ষে ও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।মাত্র তিন দিনে ৫০জনের বেশি এই মারণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তারই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত আটটায় দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছিল জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ। সকাল থেকেই ১৩০ কোটি ভারতবাসীর পাখির চোখ ছিল টিভির দিকে। কেননা, যখন একের পর এক রাজ্য এমন ভয়ঙ্কর ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে,তখন দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাসের বাণীর অপেক্ষায় ছিল গোটা দেশ।শুধু তাই নয়, তারই মধ্যে দেশের ৫১ জন উদ্যোগপতি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে লকডাউন করার জন্য আবেদন ও জানিয়েছিলেন। কিন্তু দিনের শেষে ১৩০ কোটি ভারতবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষায় জল ঢেলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তেমন কোনো সুরাহার কথা ঘোষণা করতে পারলেন না।সেই নিয়ে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে বিদ্বজ্জনেরা প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা মুখর হয়ে উঠলেন। যে দেশে কেরলের মত রাজ্য উদাহরণ হয়ে থাকতে পারে, পাঞ্জাবের মত রাজ্য গোটা পাঞ্জাবকে তালা বন্ধ করতে পারে, সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে লকডাউনের কথাই শুনতে চেয়েছিল দেশবাসী।কেননা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে ভারতে করোনা সংক্রমণ এই মুহূর্তে দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে কিন্তু তা যদি কোনভাবে চিন বা ইতালির মতো পরবর্তী ধাপে অর্থাৎ গোষ্ঠী সংক্রমনের পর্যায়ে চলে যায় তাহলে ভারতের মতো জনঘনত্বের দেশে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের এই মতামতকে উপেক্ষা করে দেশের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন আগামী পরশু অর্থাৎ রবিবার মাত্র ১৪ঘণ্টার জন্য 'জনতার কার্ফু'র ডাক দিলেন।আর সেখানেই তিনি বিশেষজ্ঞ থেকে বিদ্বজ্জনদের উপহাসের পাত্র হয়ে উঠলেন। আবার এমনও হতে পারে ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যে হারে ছড়াচ্ছে তাতে আগামী দিনে চীন বা ইটালির মতো দীর্ঘকালীন লকডাউনের পথে হাঁটতে হতে পারে গোটা দেশকে। হয়তো তারই একটা প্রাথমিক মহড়া সেরে রাখলেন প্রধানমন্ত্রী।আর তাই যদি হয় তার উত্তর সময়ই দেবে।