মাসুদূর রহমান
দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউনের সাথেসাথেই রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল যে আগামী পয়লা এপ্রিল থেকে রাজ্যের সমস্ত মানুষকে ৫ কেজি চাল ও গম দেওয়া হবে।ইতিমধ্যে পয়লা এপ্রিল থেকে সেই পদ্ধতি শুরু হয়ে গেছে কিন্তু সেই পদ্ধতিতে রয়েছে বৈষম্যের আঁচ। যদিও এই কৃষ্টি-সংস্কৃতি বাংলার মানুষ যে আজ নতুন দেখছে তা নয়, এই কৃষ্টি-সংস্কৃতি বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলেও বাংলা সাক্ষী থেকেছে।একটু বিস্তারিত ভাবে বললে তবেই বিষয়টা বোধগম্য হবে, রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী পহেলা এপ্রিল থেকে অনেক আশা বুকে বেঁধে হাতে বড় বস্তা নিয়ে এই চৈত্রের চড়া রোদকে মাথায় নিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছে ৫ কেজি চাল ও গমের জন্য।নাহলে যে সারাটা মাস ছেলে পিলে নিয়ে তাদের অভুক্ত থাকতে হবে।কিন্তু সেই ৫কেজি চাল ও গম যে ন টাকা ও তেরো টাকা মূল্যের কার্ডের গ্রাহকরা বঞ্চিত তা খোলসা করে বলেনি সরকার।আর সেখানেই ভুলভুলাইয়ার শিকার হয়েছে উক্ত গ্রাহকেরা। এই শ্রেণীভুক্ত গ্রাহকের সংখ্যাও রাজ্যে কম নয়। তারা অন্তত ভেবেছিল সরকার তাদের কাছ থেকে৯ টাকা ও ১৩ টাকাই নিক,তার বিনিময়ে ৫কেজি চাল ও গম দিক। কিন্তু সেখানেও বিধিবাম, ৫কেজি চাল গম তারা তো পেলই না উল্টে তাদের সেই পুরানো হারে অর্থাৎ মাথা পিছু মাসিক এক কেজি চাল ও এক কেজি গম নিতে হলো।
কিন্তু কেন এই বৈষম্য?এখানে বিশেষ করে উল্লেখ করতে হয় যে ধরে নেওয়া যাক এই ৯ টাকা ও১৩ টাকা মূল্যের কার্ড গ্রাহকরা উচ্চবিত্ত কিন্তু দেখা গেছে রাজ্যের অধিকাংশ নিম্নবিত্তের মানুষদের কাছেই সরকারের পদ্ধতিগত ভুলের কারণে এই কার্ড এসেছে। তাই সেখানে উচ্চবিত্ত আর নিম্নবিত্ত এই ফারাকটা আর রইল না। সরকারের এই গোড়ায় গলদের জন্য মানুষকেই বলি হতে হলো। শুধু তাই নয় এবার ধরে নেয়া যাক ওই শ্রেণীভূক্ত কার্ডের গ্রাহকরা সবাই উচ্চবিত্ত কিন্তু তাদের ও তো পেট বলে কিছু আছে।নাকি তারা সোনা রুপা খায়।এই দুর্দিনের বাজারে মাসে মাথাপিছু এক কিলো চাল ও এক কিলো গম পেলোও তারা।এই মাত্র দু কিলো চাল গমে সারা টা মাস একটা মানুষের কিকরে চলবে? প্রশ্নটা এখানেই, এই আমরা-ওরার পথ পরিহার করে রাজ্য সরকারের উচিত যাতে সর্বস্তরের রেশন কার্ডের গ্রাহকরা সমান হারে রেশন পায়।নাহলে এই করোনা ভাইরাসের মতো মহামারীর দিনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত না হয়েই মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যায়।