মাসুদূর রহমান
এখনো বছর ঘোরেনি,পিঁয়াজ নিয়ে যে হাহাকার সৃষ্টি হয়েছিল দেশজুড়ে। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা আজও স্মরণে আছে দেশবাসীর। এবার বছর ঘোরার অপেক্ষা না করেই বঙ্গবাসীর ভাগ্যাকাশে দুর্ভাগ্যের কালো ঘন মেঘের আনাগোনা। এমনিতেই করোনা আবহাওয়ার জেরে দীর্ঘ চার মাস বঙ্গবাসী সহ দেশবাসী জেরবার। তার উপরে এই চরম অবস্থার মাঝেই আমফানের রুদ্র তাণ্ডবে ছন্দপতন হয়েছে জনজীবনে।মানুষের কেড়েছে সুখ,প্রকৃতির কেড়েছে সৌন্দর্য। শাক-সবজিসহ ফসলের বিস্তর ক্ষতি।কৃষকের পড়েছে মাথায় হাত। সাধারণ মানুষ হয়েছে দিশেহারা।থলি হাতে বাজারে গেলেই চক্ষু চড়ক গাছ।সবজিতে হাত লাগানো তো দূরের কথা সবজির দাম শুনলেই দম শেষ।
ভেতো বাঙালির আলু ছাড়া রান্না। ভাবাটাই অকল্পনীয়। সেই আলু বাবু তো ৩০ টাকার ঘরে, পটল ঝিঙে ভেণ্ডি কবে থেকেই পঞ্চাশের ঘর পার করেছে। কিন্তু যার জন্য আজকের কলম তাকে কিছুদিন আগে কিনতে গেলে দোকানদারকে ক্রেতা জিজ্ঞাসা করতো, 'কি দাদা ঝাল হবে তো?' আর আজ তার দামের ঝালে ক্রেতা নাস্তানাবুদ।সে ও কিনা কেজিতে ৩০০ পেরিয়েছে।যে লঙ্কাকাণ্ড একদিন রাবণের ঔদ্ধত্য ও অহমিকা চুরমার করে ছিল। আর আজ ৩০টাকা কিলো লঙ্কা ৩০০টাকায় বিক্রিতে লঙ্কা নিজেই নিজের ঔদ্ধত্য ও অহমিকা দুটোই বাড়িয়ে নিল। শুধু নাম আর বিষয়ের তফাৎ আরকি ।চারিদিকে একটাই প্রশ্ন,কেন এমন হলো?চার মাসের ওপর লকডাউন চলছে। লকডাউনের মত কঠিন পরিস্থিতির সময় লঙ্কার দাম যথাযোগ্য ছিল।আর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই লঙ্কার এত বড় লাফে গৃহস্থালির চোখ কপালে।তাহলে কি বৃষ্টির কারণ?সমসাময়িক সেরকম অতি ভারী বৃষ্টি হয়নি যে বিশেষ কিছু ক্ষতি হবে। তবে হ্যাঁ ভারী বৃষ্টির মধ্যে একটা কারণ হতে পারে। এর পাশাপাশি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সেই মওকাকে কাজে লাগিয়ে চওকা মারার ধান্দা করার কারণেই লঙ্কা আজ মহার্ঘ।
কিন্তু সরকারের ও তো একটা কর্তব্য থাকে, আলুর দামে টাস্কফোর্স নামিয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সরকার।আর লঙ্কাই কেন ব্রাত্য থাকবে। তারওতো দামের ঝালকে কঠিন হাতে নিয়ন্ত্রণ করে সরকার কমাতে পারে। আর তাতে অন্তত আর যাইহোক গৃহস্থালির রান্নাঘর লঙ্কাকাণ্ড থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে।