বিবিপি নিউজ: নাম মুগ্ধা সিনহা। ১৯৯৯ ব্যাচের IAS অফিসার। তাঁর সৎ এবং সাহসীকতা জন্য কোথাও বেশি দিন ডিউটি করতে পারেননি। বারবার বদলি হতে হয়েছে তাকে। বারবার প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছেন মাফিয়ারা। নেতাদের চাপের মতো খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে, আর যখনই তিনি খারাপ কিছু দেখে তা বন্ধ করতে গিয়েছেন, ততবারই সরকারের সহযোগিতায় ‘বদলি’ হতে হয়েছে তাঁকে।
২০১০ সালে রাজস্থানের ঝুনঝুনুতে এক মাফিয়া ও কালোবাজারির জন্য কুখ্যাত একটি অঞ্চলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন মুগ্ধা, এর আগেও তিনি এর থেকে অনেক বড় জেলার দায়িত্ব সামলেছেন, তাই এই জায়গা নিয়ে ততোটাও চিন্তা করেননি মুগ্ধা। তবে, দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকেই ওই এলাকার প্রথম মহিলা কালেক্টর মুগ্ধার রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল ঝুনঝুনু।
মুগ্ধা কালেক্টরের পদে থাকাকালীনই ২০১০ সালে ঝুনঝুনুর একটা বেআইনি কয়লা খনিতে বিস্ফোরণ ঘটার ফলে তিন খনি শ্রমিকের মৃত্যু হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতোটাই বেশি তাঁদের মাথাগুলো ধড় থেকে আলাদা। তিনটি মাথাই ঝুলছিল পাশে একটি গাছের উপরে। তদন্ত করার পরেও খনির মালিকের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি, মুগ্ধার উপর মাফিয়া ডনদের হুমকি ক্রমশ বাড়তে থাকে, তবে তাতে দমে যাননি, সেই বছরই তিনি ঝুনঝুনুর ওই বেআইনি কয়লা খনি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ওই ঘটনার মাত্র মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই তাঁর অন্যত্র ট্রান্সফার অর্ডার ইস্যু হয়ে যায়। ঝুনঝুনু থেকে অন্যত্র চলে যান মুগ্ধা।
আর এই ভাবেই মোট ১৫ বছরের চাকরি জীবনে ১৩ বার ট্রান্সফার হয়েছেন আইএএস IAS মুগ্ধা। মুগ্ধার মাত্র ৪ বছর বয়সে তাঁর বাবা স্বরূপ সিন্হা বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান, তিনি ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট ছিলেন। তাই ছোট থেকেই মুগ্ধার মা চেয়েছিলেন যে, তাঁর মেয়েও বড় হয়ে বাবার মতোই দেশের সেবা করুক। মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতেই IAS অফিসার হয়েছেন।