সম্পাদকীয় কলমে
মাসুদুর রহমান
মাত্র কুড়ি দিনের মধ্যে পাঁচ পাঁচটা স্বর্ণপদক জয় লাভ করে এক যুগান্তকারী ইতিহাসের রচনা। ইউরোপের মাটিতে ভারতের জয়ধ্বজা উত্তোলন করলেন অসমের মেয়ে হিমা দাস।যাঁর জন্ম থেকেই নিত্য সঙ্গী ছিল দারিদ্রতা। এক অতি সাধারণ কৃষক পরিবারের মেয়ে হয়েও চোখে স্বপ্ন ছিল, কিছু একটা করে দেখানো। শৈশবে ফুটবলের প্রতি প্রেম ছিল অগাধ ।সেজন্য কখনো-সখনো দেখা গেছে যেখানে ফুটবল টুর্নামেন্ট চলছে সেখানে কোচ কে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে মাঠে নেমে পড়া। শুধু তাই নয় মিনিট খানেকের মধ্যেই গোল করে ফেলা।এর সাথে সাথে এলাকায় নামডাক ও হতে শুরু করে।
সেই ফুটবলকে বিদায় জানিয়ে অ্যাথলেটিক্সে যোগদান করেন হিমা।সূচনা লগ্নে তাঁর জীবনের প্রথম স্বর্ণপদক যখন পাচ্ছেন তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৩। ২০১৯ এর জুলাই থেকে ধিং এক্সপ্রেস যে এরকম ভাবে ঘুরে দাঁড়াবে তা স্বপ্নেরও অতীত ছিল। ২রা জুলাই ২০০ মিটার দৌড়ে সোনা পেলেন।পাঁচ দিন পর আবারো একখানা সোনা।এরকম ভাবেই পরপর পাঁচটি সোনা। সেই সময় ক্রিকেট বিশ্বকাপে গোটা বিশ্ব তখন ক্রিকেট জ্বরে কাঁপছে। ঠিক এরকমই এক সন্ধিক্ষণে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠালেন অসমের মেয়ে হিমা ।যে ভারতবাসী ক্রিকেট ছাড়া কিছু বোঝে না সেই ভারতবাসী বরণ করে নিলো এক নতুন তারকাকে ।
শুধুমাত্র যে দৌড়ে সোনা জিতলেন তা নয় দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র জগৎ এবং খেলার জগৎ এর অসংখ্য রথী-মহারথীরা শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়ে দিলেন জিতে নিলেন সকলের মন। স্বর্ণপদক জিতে উঠেই অসমের ভয়াবহ বন্যা দুর্গতদের জন্য নিজের এক মাসের বেতনের অর্ধেক টা দান করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।শুধু তাই নয় ২৯ শে জুলাই ছিল আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস, ঐদিন বেঙ্গালুরুর বায়োলজিক্যাল পার্কে হিমা দাস এর নামে একটি বাঘের ছানার নাম ও রাখা হয়েছে। জীবনের শুরুতেই হিমা দাস হয়ে উঠেছেন নয়নের মনি।
