![]() |
| প্রণতি গোস্বামী |
মন্দিরে মায়ের কোলে বসা তিতির মায়ের মুখের সামনে মুখ নিয়ে জোরে জোরে চেঁচায় "মা তুমি কেন শুনছো না, আমিও দেবদাসী হবো"।
-- চুপ, এক্কেবারে চুপ করে থাকো। শুধু সামনে দেখো কি সুন্দর এখন কত অনুষ্ঠান হবে। তিতিরের মা লজ্জা পেয়ে ঘোমটা টা আর একটু লম্বা করে দিলেন।
-- "দেখছি তো, তাই তো আমার খুব ভালো লাগছে বলেই তো বলছি আমিও দেবদাসী হবো, আমার ও দেবতার সঙ্গে বিয়ে হবে। আমিও ঐ রকম সাজবো। দেবতার বৌ, কি মজা হবে"।
-- এবার মা ঠাস ঠাস করে মেয়ের মুখে চড় কসিয়ে দেন। আশেপাশের জনতা যারা খুব ভক্তি সহকারে অনুষ্ঠান উপভোগ করছিল তারা মুখে রুমাল চাপাদিল।
লজ্জা কি লজ্জার কথা। মেয়ে নাকি নিজেই দেবদাসী হতে চায়। কেমন মা রে বাবা; কোন শিক্ষে দিক্ষে নেই। এত লোকের সামনে নিজের মুখেই আব্দার করে "দেবদাসী হবো"। উঁহু কি দিনকাল পড়েছে।
আট বছরের তিতির অবাক হয়। এতই যদি লজ্জাকর তাহলে এতলোক কেন এসেছে?? কোই কেউ তো কোনো মানাও করছেনা। কত পূজারী বামুনরা খোল-করতাল বাজিয়ে নাচ করছে, সবাই হরি কীর্তন ও করছে। তাহলে লজ্জার কি হলো?
অবশ্য ওই দিদিটা যে নাকি এখনই দেবতার বৌ হবে, সে খুব কাঁদছে। মনে হয় একা ওই জানে এতে লজ্জাটা কোথায় লুকানো আছে।
মা ঘরে চলো এবার আমারও লজ্জা করছে, ওই দিদির কান্না দেখেও কেউ ওকে আদর করছেনা কেন?? চলো ঘরে চলো মা। আমার ও খুব লজ্জা করছে মা। এ কেমন বৌ হওয়া যাতে বৌ কাঁদলে সবাই হাততালি দিয়ে নাচে, এতো লজ্জারই কথা মা। আমি চাইনা এমন দেবতার বৌ হতে।
