বিবিপি নিউজ,প্রদীপ ব্যানার্জী,অশোকনগর: বর্তমানে রাজ্য জুড়ে যখন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে জোর জল্পনা চলছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি তাদের গুটি সাজানো শুরু করছে। ঠিক তখনই সম্পূর্ণ একটি অরাজনৈতিক সংগঠন অশোকনগর কল্যাণগড় পুরোহিত চেতনা কল্যাণ সমিতির পরিচালন কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো ৩০ শে এপ্রিল রবিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগরে তাদের নিজস্ব কার্যালয়ে। মূল কার্যালয় এবং বিভিন্ন শাখা মিলিয়ে প্রায় ৭০০ জন সদস্য রয়েছেন এই সমিতিতে । ২o জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ১৫ জন নির্বাচিত সদস্য নিয়ে কার্যকরী সমিতি গঠন করা হবে।
সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ৩ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ পর্ব। প্রায় তিনশোর উপরে সদস্য ভোট দান করেছেন এদিন। নিজেদের মধ্যে থেকেই রীতিমত নির্বাচন কমিশনার বসিয়ে সমস্ত নিয়ম কানুন মেনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো । এমন কি যারা এদিন উপস্থিত থাকতে পারবেন না তাদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।
ভোট প্রক্রিয়াতে সচিত্র ব্যালট পেপারের বন্দোবস্ত করা হয়ে ছিল। সদস্যদের সমিতির নিজস্ব পরিচয় পত্র দেখিয়ে ভোট দানে অংশ গ্রহণ করতে দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কেন্দ্রের মধ্যে বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
এই নির্বাচন ঘিরে সমিতির সদস্যদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো।
প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছিল কোনো উৎসব চলছে হয়তো। রীতিমত তাবু টানিয়ে ভোট দাতাদের বসার জায়গা করা হয়েছে। প্রার্থীদের জন্য কিছুটা দূরে আলাদা ক্যাম্প করা হয়েছে।
দত্ত পুকুর, বিড়া, গুমা, নাকশা,হাবড়া,বসিরহাট বিভিন্ন শাখা সংগঠন থেকেও সংগঠনের সদস্যরা আসেন ভোট দিতে।
ভোট দিতে যারা এসেছিলেন তাদের জন্য মধ্যাহ্ন ভোজনের ও বন্দোবস্ত করা হয়েছিল সমিতির পক্ষ থেকে।
সমিতির পক্ষে কিশোর ভট্টাচার্য্য, দীপেশ চক্রবর্তী, দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী, কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্ত্তী, সুব্রত চক্রবর্ত্তী প্রমুখ এনারা জানালেন প্রতিবছর সমিতির পরিচালন কমিটির নির্বাচন সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। এটা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সংগঠন। উৎসবের মেজাজে ভোট হয় এখানে।
এই পুরোহিত সমিতির নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন দুই জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মী দেবু চক্রবর্ত্তী এবং প্রবিরেশ চক্রবর্ত্তী । এমন শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট পরিচালনা করে তারাও ভীষণ খুশী।
হাবরা ফুলতলা শাখার সম্পাদক বিপ্লব চ্যাটার্জি জানালেন আজকের এই নির্বাচন একটা উৎসবে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন
এই পুরোহিত সমিতি বছরের বিভিন্ন সময় অনেক সামাজিক কর্ম কান্ড করে থাকেন যেমন দুস্থ মানুষদের বস্ত্র, ধুতি দান, গণ-উপনয়ন ইত্যাদি।
আগামী দিনেও গণ- বিবাহ, গণ-উপনয়ন এবং জনকল্যাণ মূলক আরো অনেক সামাজিক কার্য্যকলাপ করবার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানালেন।
পুরোহিত সমিতির এই ভোট উৎসব দেখে অনেকেই মন্তব্য করছেন এই রাজ্যের তথা দেশের সমস্ত নির্বাচনই যেনো এমন শান্তি পূর্ন উৎসবে পরিণত হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ৪ঠা মে বৃহস্পতিবার নির্বাচিত ১৫জন সদস্য শপথ বাক্য পাঠ করেন।

